জাফর আলম, কক্সবাজার মিয়ানমারের বিভিন্ন কারাগারে কারাভোগশেষে ৮৫ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। আর রাখাইন রাজ্যের অস্থিরতায় বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া ১২৩ জন মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) এবং সেনা সদস্যদের সেদেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়াস্থ বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে তাদের হস্তান্তর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন।তিনি বলেন, ৩ দফায় অনুষ্ঠিত প্রত্যাবসন প্রক্রিয়ার মতোই এবারও ৮৫ বাংলাদেশিকে নিয়ে আসা এবং মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলটি ১২৩ বিজিপি ও সেনা সদস্যদের নিয়ে স্বদেশে ফেরত যাচ্ছেন।পুরো প্রক্রিয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মো. রাহাত বিন কুতুব তদারকি করছেন। প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শনিবার সকালে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর ‘ইউএমএস চিন ডুইন’ নামের জাহাজটি ৮৫ বাংলাদেশিকে নিয়ে রওনা হয়। জাহাজটি সাগরের বাংলাদেশ সীমানায় অবস্থান নেয়। পরে সেখান থেকে রবিবার সকাল সোয়া ৯ টায় বাংলাদেশি একটি জাহাজে করে কক্সবাজার শহরের বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে পৌঁছায়। এদিকে সকাল সাড়ে ৮ টায় টেকনাফের দমদমিয়া এলাকায় বিজিবির হেফাজতে থাকা মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি ও সেনাবাহিনীর ১২৩ জন সদস্যকে বাস যোগে আনা হয়। এখন উভয় দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা তাদের হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতা চলছে।আনুষ্ঠানিকতা শেষে অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া ব্যক্তিদের পুলিশের কাছে এবং অন্যদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।সংশ্লিষ্টরা জানায়, প্রত্যাগত ৮৫ জন বাংলাদেশির মধ্যে ২৬ জন মিয়ানমারের মলামাইন কারাগারে, ১৬ জন পাথেইন কারাগারে, ৩ জন চকমারউ কারাগারে এবং বাকিরা রাখাইনের বিভিন্ন কারাগারে ছিলেন। প্রত্যাবর্তনকারীরা কক্সবাজার, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী ও ঢাকা জেলার। ইয়াঙ্গুনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এবং সিতওয়েস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের অব্যাহত প্রচেষ্টায় আরও একবার বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে তাদের পরিবারের কাছে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়েছে। এ নিয়ে গত ১৫ মাসে মিয়ানমারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সর্বমোট ৩৩২ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠাতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে।উল্লেখ্য, গত ৯ জুন ৪৫ বাংলাদেশি কারাভোগ শেষে দেশে ফিরেন। ওই দিন মিয়ানমার ফেরত যান ১৩৪ বিজিপি ও সেনা সদস্য, ২৫ এপ্রিল মিয়ানমার থেকে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরে ছিলেন ১৭৩ জন বাংলাদেশি। একই সঙ্গে ওইদিন বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ২৮৮ জন মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি ও সেনা সদস্যকে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশ। ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ৩৩০ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি, সেনা ও কাস্টমস কর্মকর্তাকে স্বদেশে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশ।